ধর্ম তুই আদরে থাক! আমি পুড়ে যাচ্ছি...
- আশিস বিশ্বাস
ঢাকা: হুমায়ুন আজাদ বলেছিলেন-‘
মন্দিরও ভাঙে
ধার্মিকেরা
তারপরও দাবি করে তারা ধার্মিক
আর যারা ভাঙাভাঙিতে নেই
তারা অধার্মিক ও নাস্তিক’
অন্য এক মনীষীর কথা-
‘ঈশ্বরের জন্য আমরা
মানুষকে
খুন করতে পারি
নিজের শরীর বোমা মেরে
উড়িয়ে দিতে পারি
কিন্তু
ঈশ্বরের জন্য
মানুষকে
ভালোবাসতে পারি না।
হায়! ঈশ্বর
তুমি কই?’
দেশে যা চলছে, তাকে
এক কথায় বলা চলে, ধর্মের নামে অধর্মে কাজ। দেশে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও
সংখ্যালঘুর ওপর হামলা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। কারণটি রাজনৈতিক।
কিন্তু হামলা সাম্প্রদায়িক। তবে কোথাও সংখ্যালঘুদের প্রতিরোধ কিংবা পাল্টা
হামলার ঘটনা ঘটেনি। ঘটনাটি একতরফা। সংখ্যাগুরুরা হামলে পড়ছে সংখ্যালঘু হিন্দু
কিংবা আদিবাসীদের ওপর।
যারা ঘটনাটি ঘটাচ্ছেন, তাদের বেশির ভাগই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ও জামায়াতের ইসলামীর উগ্র কর্মী-সমর্থকেরা। কিন্তু এ ঘটনা যাতে ঘটতে না পারে, তার জন্য সরকার আগাম কিছু করেছে, এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বরং কোথাও কোথাও সংখ্যালঘু নিপীড়নের সঙ্গে সরকারি দল আওয়ামী লীগের লোকজনও জড়িত বলে ক্ষতিগ্রস্তদের সূত্রে জানা গেছে। বিশেষ করে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হেরে যাওয়ার পর তার সমর্থকেরা প্রতিশোধে হামলে পড়েছেন সংখ্যালঘু হিন্দু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর। হামলা হয়েছে দল বেঁধে। ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে, ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। মন্দিরে আগুন দেওয়া হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের মারধর করা হয়েছে। বাদ যায়নি ধর্ষণও।
বিবিসি বাংলা |
সরকারি বিদ্রোহী প্রার্থীদের হামলার কারণ দুটো। প্রথমত-
সংখ্যালঘুরা কেন তাকে ভোট দেয়নি। দ্বিতীয়ত- কেন তার ভোটকেন্দ্রে যায়নি ভোট
দিতে। আমরা জানি, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে খুব কম ভোটারই গেছেন। সে
কারণে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরাও যাননি বলা চলে। এমন কী আওয়ামী লীগের
সমর্থকরাও যাননি। কারণ, এ সংসদ হয়ত বেশি
দিন স্থায়ী হবে না। এ ছাড়া ভোট দিতে গেলে না জানি পেট্রোল বোমায় পুড়ে মরতে হয়।
দেশে বিরোধী দল আন্দোলনের নামে যা করছে, তা আন্দোলন নয়, একে এক কথায় সন্ত্রাসী
কর্মকাণ্ড বলে।
আন্দোলন করতে হলে দলীয় সমর্থক-কর্মীদের রাস্তায় নামতে হয় ও
সাধারণ মানুষকে দাবির সংযুক্ত করে তারা যাতে রাস্তায় নেমে আসে, সে ব্যবস্থা করতে
হয়। কিন্তু আমরা দেখেছি উল্টো। দলীয় নেতাকর্মীরা পুলিশের ভয়ে রাস্তায় নামেননি।
বরং টাকার বিনিময়ে ভাড়াটে দুর্বৃত্তদের হাতে পেট্রোল বোমা তুলে দিয়েছেন। তাহলে
মানুষ কেন রাস্তায় নামবে!
তাহলে অবস্থাটা কী দাঁড়ালো- সংখ্যালঘুদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়াও অপরাধ। আবার না যাওয়াও অপরাধ হিসেবে গণ্য করে তাদের ওপর সরকারি দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বিএনপি-জামায়াতের লোকেরা হামলা করেছে। কেউ স্বীকার করুন আর নাই-ই করুন। এটাই ছিল বাস্তবতা।
এদিকে, আবার কারওয়ান বাজার থেকে প্রকাশিত একটি পত্রিকা কী
করলো! তারা একটি ভোটকেন্দ্রের ছবি ছাপালো। তাতে বেশ কয়েকজন নারী ভোটার লাইনে
দাঁড়িয়ে আছেন। এদের মধ্যে মাথার সিঁথিতে সিঁদুর পরা নারীও অর্থাৎ হিন্দু নারীও
ছিলেন। পত্রিকাটি হিন্দু নারীদের সংখ্যা বেশি দেখাতে ফটোশপের মাধ্যমে আরো কয়েক
নারীর মাথায় সিঁদুর লাগিয়ে দিলো। তারমানে তারা বোঝাতে চাইলো, হিন্দু সম্প্রদায়েরা লোকেরা ভোটকেন্দ্রে বেশি
গেছে। ফলে, যা হওয়ার তাই হলো। ধর্মাশ্রয়ী দল বিএনপি ও উগ্র সাম্প্রদায়িক দল
জামায়াত, সরকারের বিরুদ্ধে কিছু করতে না পেরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালালো।
তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিলো। আসবাবপত্র তছনছ করলো, নারী-শিশুরাও রেহাই পায়নি তাদের
হাত থেকে। এই হচ্ছে বাস্তবতা।
তবে আশার কথা, মানবতার যেমন কান্না আছে, আছে তার লজ্জাও। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে
সংখ্যালঘু মানুষের আর্তি ও শুভ বুদ্ধি সম্পন্ন সংখ্যাগুরু মানুষ নিজেদের লজ্জার
কথাও অকপটে স্বীকার করেছেন। তাই, তুলে ধরছি- আমাদের বিবেককে জাগ্রত করার জন্য।
অভয়নগরে (যশোর) হিন্দুদের ১২ বাড়িতে আগুন, ১৩০টি ভাঙচুর...
একদিন আমিও পুড়ে যাবো। এদেশ থেকে হিন্দু বিলুপ্ত হচ্ছে, হবে। তাদের বাড়ি পুড়ছে,
ধনসম্পদ লুটপাট হচ্ছে,
মন্দির ভাঙছে ...
বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক একটি দেশ। কারণ, এখানে সম্প্রদায় একটাই। অবিলম্বে
সংখ্যালঘুদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হোক! তারা ভোট দিলেও সমস্যা,
না দিলেও সমস্যা।
কাফের -মালাউনদের স্থান বাংলার মাটিতে নয়!
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পুড়ছে হিন্দু!
ধর্ম তুই আদরে থাক! আমি পুড়ে যাচ্ছি ..আমার মা পুড়ছে ..বোনটা
ধর্ষিত হওয়ার ভয়ে কাঁদছে ..অনুভূতি হারিয়ে গেছে ..
আমি অন্তত মরতে চাই মানুষের মতো ...
আপাতত এই ছিলো সুসংবাদ!
[বি.দ্রঃ আপনার ধর্মীয় অনুভূতিতে লাগলে মালাউন বলে জোরে একখান গালি দিবেন .. ]
অদ্রিক রাজ :
আমি
মানুষ,মানবতা
আমার ধর্ম এবং আমি এই দেশের একজন নাগরিক,এমনটাই ভাবি সবসময়।এই
দেশের জল,বায়ু,মাটিতে হেসে খেলে বড় হয়েছি,তাই এদেশকে ভালোবাসি মন
থেকে। কিন্তু,প্রতিটি সাম্প্রদায়িক নগ্ন হামলা আমাকে বার বার মনে করিয়ে দেয়,আমি সংখ্যালঘুর ঘরে জন্ম
নিয়েছি।আমি সংখ্যালঘু আমি মুসলমানের ঘরে জন্মগ্রহণ করিনি, আমি
মুসলমান না এটাই কি আমার সবচেয়ে বড় অপরাধ ?:-(
একদিন হইতোবা বাংলাদেশিরা গল্প করবে...
এককালে এই দেশে হিন্দু সম্প্রদায় বসবাস
করতো। হিন্দু মেয়েদের কপালে থাকতো সিঁদুর হাতে
থাকতো শাঁখা। তাদের বারো মাসে তের পার্বণ ছিল। তারা মূর্তি পূজা করতো। তাদের প্রতিটি উৎসব ছিল রঙ্গীন। তারা ছিল সংখ্যালঘু। তাদের উপর আক্রমণ করলেও প্রতিবাদ করতো না। নীরব থাকতো। স্বাধীনতা যুদ্ধ থেকে শুরু করে তাদের ওপর
অনেক অত্যাচার, হামলা
হয়েছে। কখনো বিএনপি, কখনো আওয়ামী লীগ এই
অত্যাচার করতো। আর জামাত-শিবিরতো কথায় কথায় তাদের ওপর
হামলা করতো। ভেঙে দেয়া হতো উপাসনালয়, বাড়িঘর। কোনো সরকার তাদের পাশে দাঁড়াতো না। দূর্বল বলে রাজপথে নেমে প্রতিবাদ করতো না। আবার যদি হামলা করে, এই ভয়ে। শুধু নীরবে কাঁদতো। ছিল চাপা হাহাকার। দিন গেছে, মাস গেছে,
বছর
গেছে, যুগ
গেছে, বাংলাদেশ
থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ও আস্তে আস্তে হারিয়ে গেছে................!!!!!
Amr village jessore e ekhon
dhukteo lojja lagse ..... Ki
jobab
dibo tader ....... Tara bolbe BAJAN
VOTE TO THIK NOUKA TE DILAM
KINTU AMAGORE SEI NOUKA TEI
GANGER JOL E VASAI DILA ,........
KI
jobab dibo tader bolte parben
#HASINA
হায় খোদা! কোন দেশে আছি আমরা? এ জন্যই কি দেশ স্বাধীন করা ? ছিঃ !
মারো হিন্দু, ঘর পোড়াও শতাধিক ;
বোমা বানাও, ফাটাও দিগ্বিদিক ;
মরুক মানুষ, হও পৈশাচিক ;
তা না হলে, তুমি কিসের গণতান্ত্রিক ?????
Farhana Jerin
ক্ষতবিক্ষত
বাংলাদেশ।
ভূলন্ঠিত
মানবতা।
পুড়ছে বাংলাদেশ।
জ্বলছে সভ্যতা।
ধিক! ধিক! ধিক!
রুখে দাঁড়াবার সময় কি, এখনো হয়নি বাঙ্গালীর??
পুড়ছে বাংলাদেশ।
জ্বলছে সভ্যতা।
ধিক! ধিক! ধিক!
রুখে দাঁড়াবার সময় কি, এখনো হয়নি বাঙ্গালীর??
... হিন্দুরা
বাংলাদেশে
আছে শুধু মরার জন্য, ৭১
থেকে আজ পর্যন্ত শুধু হিন্দুরা মারা যায় বিভিন্ন ইস্যুতে আর তার ফল ভোগ করে তথাকথিত রাজনীতিবিদ ও দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠরা। আবার এরাই বলে ধর্মে আছে "''' মানুষ হত্য মহাপাপ
""" আসলে হবে মুসলমান হত্যা মহাপাপ
...
Imtiaz Bappy
দিনের কোনো এক বেলার খাবার পাশের বাড়ির হিন্দু কাকাদের বাসায় খেতাম
অথবা এলাকার কোনো এক হিন্দু বন্ধুর
বাসায়...বেশি রাত হয়ে যেত বলে অনেক রাতই কাটিয়েছি হিন্দু বন্ধুদের বাসায়...দূর্গা পূজা আসলেই যেন অন্য রকম
অনুভূতি...পূজা শহর জুড়ে আলোকসজ্জার নিচ
দিয়ে রাতভর ঘুরে বেড়াই অনুভূতিটা ঠিক ঈদ ঈদ লাগে।
পূজোর
সময় মুগ ডালের খিচুড়ি খেতে গিয়ে কখনো হিন্দু গন্ধ পাইনি...!!! ঈদ এলে হিন্দু বন্ধুরা সহ কত শত প্ল্যান...এমনকি কোরবানির হাটেও কত হিন্দু বন্ধুকে নিয়ে গেছি সাথে তাঁর ঠিক
নেই......টাকা না
থাকলে বাসার সামনের সোনার কর্মকার সোমর কাকার কাছ থেকে কতদিন যে টিফিনের টাকা নিয়ে স্কুলে গিয়েছি তার হিসাব করাও দুষ্কর। স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বন্ধু মহলের মধ্যে ২/৪ হিন্দু বন্ধু
থাকতোই। জীবনটাই কেটেছে অসাম্প্রদায়িক এক সমাজে...
কিন্তু এত কিছুর পরও যখনই সুযোগ পেয়েছে আমার দেশের হিন্দু ভাই বোনদের উপর পাকিস্তানের ফেলে যাওয়া কীট জামাত-শিবির এবং তাদের দোসররা ভয়াবহ তান্ডব চালিয়েছে...!!!! কিছুই করতে পারিনি আগেও, কিছুই করতে পারছিনা এখনো...!!!! শুধু অথর্ব নির্লজ্জ মুসলিম হিসেবে নিজে নিজে পাগলের প্রলাপ বকে যাচ্ছি রাস্তা ঘাটে বা ফেসবুকে...
আমি
তোমাদের কাছে লজ্জিত কারণ আমি মুসলমান...
সালাম আজাদ
যত দিন
কোনো মানুষের মধ্যে ধর্ম
থাকবে, তত দিন সে প্রকৃত মানুষ
হতে
পারবে না। ধর্ম
হচ্ছে অশিক্ষিত
মানুষের
সংস্কৃতি।
...লেখক সালাম আজাদ
সর্বশেষ
নির্বাচন পরবর্তী সাম্প্রদায়িক হামলা নিয়ে দৃঢ়ভাবে দুটি দিক তুলে ধরা দরকার। প্রথমত, জামাত-বিএনপি জোট হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রদায়িক
হামলাগুলো চালিয়ে চেষ্টা করছে মানুষের মাঝে সাম্প্রদায়িক অনুভূতিগুলোকে আরও গভীরতর, আরও পাকাপোক্ত করে রাজনীতির পুঁজি বানাতে। কিন্তু অনেকগুলো ঘটনাতেই সরকারি দল আওয়ামী লীগও প্রত্যক্ষভাবে
এই সাম্প্রদায়িক হামলায় অংশ নিয়েছে, মদদ দিয়েছে। এটা
থেকে এইটাই বোঝা যায় যে, বিদ্যদান রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক কাঠামোতে সাম্প্রদায়িকতাকে
ব্যবহার করাটা লুটেরা রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য খুবই কার্যকর ব্যবসাপুঁজি, তারা সেটা প্রয়োজন ও সুযোগ মতো ব্যবহার করতে দ্বিধা করে না।
যেমন
সাঈদীর ফাঁসির রায়ের ঘটনায় সাম্প্রদায়িক হামলা পরিচালনা করা হয়েছে। বলা যায় গোটা
হিন্দু সম্প্রদায়কে রাজনৈতিকভাবে জিম্মি করার জন্য, যুদ্ধাপরাধীর বিচারকে বানচাল করতে নিরপরাধ মানুষকে লক্ষ্যবস্তু
করা। উল্টোদিকে, রামপালে ভারতীয় পুঁজির সহায়াতায় সুন্দরবনধ্বংসী কয়লা বিদ্যুৎ
প্রকল্পের নামে যাদের জমি অধিগ্রহণ করছে আওয়ামী লীগ, সেই বসতভিটা-আবাদী জমিহারারা প্রায় সর্বাংশে হিন্দু
সম্প্রদায়ের মানুষ। প্রকল্পের
স্থান নির্বাচনে এই সাম্প্রদায়িক হিসাব-নিকাশ খুব গূরুত্বপূর্ণ এবং কেবল 'নোমো'রাই উচ্ছেদ হবে। কাজেই মুসলমানদের আপত্তি করার কিছু নাই, এমন প্রচার স্থানীয লীগ নেতারা অকাতরেই চালাচ্ছে।
সশস্ত্র
হামলা চালিয়ে তাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া কিংবা প্রকল্পের নামে উচ্ছেদ করার মতো বড় বড় দৃশ্যমান ঘটনাই
কেবল নয়, ভয়
দেখিয়ে দেশত্যাগে বাধ্য করে তাদের জমিজমা-ব্যবসা দখল করার কাজেও
বিএনপি-জামাত-আওয়ামী লীগ কোনো দলই পিছিয়ে নেই। এটা হলো নিত্যদিনের সাম্প্রদায়িকতা। এরই সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গ হলো তাদের ওপর প্রাত্যহিক সাংস্কৃতিক
পীড়ন।
জামাত
বিএনপির হামলার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার উদ্যোগ যেমন আমাদের সম্মিলিতভাবে নিতে হবে, তেমনি ভুলে গেলে চলবে না, এই হামলা ঠেকাতে ব্যর্থতার দায়
দায়িত্ব কোনোভাবেই সরকার-নির্বাচন কমিশন-প্রশাসন এড়াতে পারে না। সাঈদীর রায়ের পর থেকে যে সব এলাকায় গোলযোগ পাকানো হয়েছে, সেখানেই এইবারের হামলাও ঘটেছে। প্রধান জাতীয় দৈনিকগুলোতে সংবাদ এসেছে আক্রান্তরা হামলার আগেই
সরকারি দল ও প্রশাসনকে খবর জানিয়েছিল।
তাহলে
কেন প্রতিরোধ করা দূরের কথা, কোনো একটি ঘটনাতেও ঠেকানোর ন্যূনতম চেষ্টাও দেখা যায়নি। কেন? কোনো হামলাই চোরাগোপ্তা হামলা ছিল না। প্রতিটিই ছিল সংগঠিত হামলা, চালানো হয়েছিল নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের বসতির ওপর। ফলে, হামলাকারীদের ঠেকানো কিংবা বসতি রক্ষা কোনোটিই অসম্ভব
ছিল না।
বাংলাদেশের
লুটেরা রাজনীতির দুটো দিক এ থেকে স্পষ্ট, এই ডাকাতরা কেউ জনসমর্থন আদায় করে ভিন্ন সম্প্রদায়ের ঘড়বাড়ি
আগুনে পুড়িয়ে; কেউ
সেই পোড়া ঘড়বাড়ি দেখিয়ে নিজের দলে ভোট টানায়। ফলে, সাম্প্রদায়িকতা বন্ধে বাস্তব আগ্রহ দুই জোটের কারোরই নেই।
বন্ধু
জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার ভাষায়: "জামাত-শিবির-বিএনপি এলে দেশে অরাজকতা হবে, তাই আগামী পনের বছর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে হবে– তবে আমরাও বুঝতে চাই, সেটি তারা আমাদের বাড়িঘর পুড়িয়েই করতে
চান কিনা!"
প্রথম
আলো! আমার বন্ধুদের সিঁদুর নিয়ে নোংরা খেলা বন্ধ করো! এ চিহ্ন সংখ্যালঘুতার না। এ শেকড়। এ
সংস্কৃতি। এ
বিশ্বাস। এ
আস্থা। এ নিরাপত্তা। এ
পরিচয়! আমি বহন করি আমার বন্ধুদের সাথে চিরকালের বাঙালি সংস্কৃতি। সিঁদুর। ডোন্ট
টাচ মাই ফ্রেন্ড!
রবীন আহসান
সিঁদুরের সব লাল মুছে দেয়ার নাম
বাংলাদেশ
রবীন আহসান
সিঁদুরের সব লাল মুছে দেয়ার নাম
ভোট-গণতন্ত্র-ধর্ম নিরোপেক্ষতা ???
মন্দির থেকে তোমার ঘর
তোমার মাটি তোমার সবুজ
তোমার শাখার চুড়ি ভাঙার নাম
বাংলাদেশে!!!!
এই কনকনে শীতে কি আগুন
তোমাদের বাড়িতে!!!
এর নাম গণতন্ত্র!!! এর নাম ভোট !!!
সিঁথিতে সিঁদুর থাকায় ১৯৭১
তোমাকে পালাতে হয়েছে
মাইলের পর মাইল!! ধর্ষন খুন
মালাউন বলে সব যায়েজ এখানে!!!
এই বাংলাদেশ তোমার না
তোবার বাবার না
তোমার দাদার না
হাজার বছর পরও
এই মাটি এই সবুজ এই নদী এই মাটি
এসব তোমার না মা!!!
তুমি সিঁদুর ধরে রাখতে
তোমার ১৮ বছরের কন্যাকে বাঁচাতে
একদিন রাতে সীমান্ত পারি দেবে
শিকড়ের সব ছেড়ে উদ্বাস্তু হবে
তোমার এই রক্তপাত দেখবে না কেউ
সিঁদুরের লালের চেয়ে লাল এই রক্তপাত
ভোট আর গণতন্ত্রের এই নিরব রক্তপাতের
নাম বাংলাদেশ। আমি লজ্জিত
এই কনকনে শীতে তোমার বাড়িতে আগুন!!
আগুন থেকে বাঁচতে তুমি তোমরা
পালাচ্ছ মাইলের পর মাইল
আমি লেপমুড়ি দিয়ে ঘুমাই!!! এ আমার
দেশ!!!
সিঁদুরের লালরঙ মা
এদেশ তোমার না!!! তুমি উদ্বাস্তু !!!
এই ধর্মনিরপেক্ষ ভোট আর গণতন্ত্রের
শ্রাদ্ধ করা ছাড়া
আমার আর কিছুই করার নাই মা...
বিধর্মী মারলে অনেক সোয়াব। বেহেশত নিশ্চিত। তাদের ঘর বাড়ি ভাঙার জোশে থাকা জিহাদি
আফিম খাওয়া নির্বোধ দের জন্য। যদি
সত্যিই ধর্মের পথে কার্য সম্পাদন করতে যাস, তবে তোর জন্য অবশ্য পাঠ্য। কারন তুমি পড় নাই, পড়লে এই নিধনে যাইতা না। তুমি নিজেই ভুলে গেছো কুরআনের প্রথম
শব্দ, ইকরা.....
'পড়'... জ্ঞান অর্জন কর।
সাবধান! যদি কোনো মুসলিম কোনো অমুসলিম
নাগরিকের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে তার অধিকার খর্ব করে, কষ্ট দেয় এবং তার কোনো বস্তু জোরপূর্বক নিয়ে যায়, তাহলে কিয়ামতের দিন আমি
তার পক্ষে আল্লাহর দরবারে অভিযোগ উত্থাপন করব।
[আবূ দাঊদ : ৩০৫২]
যে মুসলিম কর্তৃক নিরাপত্তা প্রাপ্ত
কোনো অমুসলিমকে হত্যা করবে,
সে
জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ
তার ঘ্রাণ পাওয়া যায় চল্লিশ বছরের পথের দূরত্ব থেকে।
[বুখারী : ৩১৬৬]
আল্লাহ নিষেধ করেন না ওই লোকদের সঙ্গে
সদাচার ও ইনসাফপূর্ণ ব্যবহার করতে যারা তোমাদের সঙ্গে ধর্মকেন্দ্রিক যুদ্ধ করে নি
এবং তোমাদের আবাসভূমি হতে তোমাদের বের করে দেয় নি। নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফকারীদের পছন্দ করেন।
[সূরা আল-মুমতাহিনা : ৮]
রাসূলুল্লাহ (সাঃ)বলেছেন,- “মনে রেখো যদি কোন মুসলমান
কোন অমুসলিম নাগরিকের উপর নিপীড়ন চালায়, তাদের অধিকার খর্ব করে, তার কোন বস্তু জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়, তাহলে কেয়ামতের দিন আমি
আল্লাহর আদালতে তার বিরূদ্ধে অমুসলিম নাগরিকদের পক্ষ অবলম্বন করব।”
(আবু
দাউদ)।
=====================
এমনকি গালিগালাজ এর ব্যাপারেও বলা আছে
স্পষ্ট। আপনি একজন হিন্দুকে মালাউন বলতে পারেন
না। মালাউন অর্থ 'অভিশপ্ত'।
মুসলমানেরা জন্মগতভাবেই ইসলাম ধর্ম নিয়ে
গর্বিত। ইসলামই একমাত্র সত্য ও শান্তির ধর্ম এই
মন্ত্র তারা শৈশব থেকেই পেয়ে থাকেন এবং সারাজীবন কিছু বুঝে না বুঝেই এই মন্ত্রখানি
বংশপরম্পরায় নতুন প্রজন্মকে দিয়ে যান।
আশ্চর্যের বিষয় তারা পৃথিবীর অন্য
মানুষদের আচার-আচরণ ও জীবনযাত্রার ভালো দিকগুলোকে দেখেও দেখেন না। তারা শিক্ষা নেন অশিক্ষিত হুজুরদের কাছ
থেকে এবং
ছোটবেলায় এই হুজুরীয় শিক্ষার বীজ এমনভাবে গেঁড়ে বসে যে, পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে
পড়াশুনা করলেও নীতি-নৈতিকতার শিক্ষা ভালো-মন্দের ব্যবধান ধরতে পারার মতো
বিবেচনাবোধ আর জাগ্রত হয় না। ভিণধর্মী
বা নাস্তিকেরা যাই বলুক আর যাই করুক সব কিছুকেই না বুঝে নেগেটিভলি নিতে থাকেন।
এবার প্রশ্ন হলো, একজন মুসলমানের আদৌ গর্ব
করবার মতো কি আছে, অন্ধবিশ্বাস ছাড়া? একজন নাস্তিক কিংবা খ্রিষ্টান কিংবা বৌদ্ধ ধর্মালম্বীর কাছে
ভিনধর্মী/ভিনদেশি একজন মানুষ যতটা নিরাপদ, একজন মুসলমানের কাছে আদৌ কি অন্যেরা
ততটা নিরাপদ? একজন
ভিনধর্মী/নাস্তিকের কাছ থেকে পৃথিবী যতটা জ্ঞান-বিজ্ঞানের সুফল কিংবা মানবিকতা
পেয়েছে, একজন
মুসলমানের কাছ থেকে কি পৃথিবী ততটা পেয়েছে ?
আমি জানি, মুমিনেরা এখন কোরানের দুচারটে
আয়াত লিখেই নিজেদের শ্রেষ্ঠ দাবি করবেন। কেননা,
তাদের কাছে আদিম যুগের এই দু’একটি
আয়াত ছাড়া উপস্থাপন করবার মতো আর কিছুই নেই।
বাংলাদেশ রাষ্ট্র দাঁড়িয়ে
আছে ব্রিটিশ-পাকিস্তানের সকল অগণতান্ত্রিক নিপীড়নমূলক আইনি কাঠামোর ওপর। ফলে জন্মের পরে বাংলাদেশের
মানুষ এক মুহুর্তের জন্যও গণতন্ত্রের স্বাদ পায়নি। অগণতান্ত্রিক পথে ১৯৭২ সালে
জাতি বিদ্বেষী ও নারী বিদ্বেষী সংবিধান প্রণয়নের মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ-পাকিস্তানের
সকল অগণতান্ত্রিক নিপীড়নমূলক আইনি কাঠামোর অনুমোদন দেয়া হয়।
ফলে, মুক্তিযুদ্ধের
বাংলাদেশ প্রগতির পথে না গিয়ে গত ৪২ বছর অগ্রসর হয়েছে প্রতিক্রিয়াশীল পথে। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে। আজকের সাম্প্রদায়িকতার বীজ
বপণ করা হয়ে ছিল স্বাধীনতার অল্পকালের মধ্যেই। জিয়া-এরশাদের পরিচর্যায় তা
আজ মহীরূহে পরিণত হয়েছে। সংবিধানের ১৫তম সংশোধনীতেও সেই সাম্প্রদায়িক বটবৃক্ষের শেকড়ে জল ঢেলে
তাকে আরও সতেজ করা হয়েছে।
ফলে, বহু বিলম্বে শুরু হলেও
বর্তমানে চলমান যুদ্ধ অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া বানচাল ও বিতর্কিত করার মরিয়া
চেষ্টা ১৮ দলীয় বিএনপি ও জামাত জোটের। চলমান সাম্প্রদায়িক হানাহানির সকল প্রণোদনা নিহিত আছে বিদ্যমান
রাষ্ট্রের সারাদেহে।
অতএব, রাষ্ট্রের গলায় সাম্প্রদায়িক মালা ঝুলিয়ে রেখে অসাম্প্রদায়িক সামাজিক
পরিবেশ কামনা অর্থহীন।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর হামলা, নির্যাতন, খুন-ধর্ষণ এবং তাদের
বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজের
ঘটনাটিকে এখনও কেবলমাত্র ‘সাম্প্রদায়িকতা’র ফেক টার্ম দিয়ে ব্যাখ্যা
করা হচ্ছে। আদতে এই হামলা-নির্যাতন পরিপূর্ণ রূপে
রাজনৈতিক হামলা। ক্ষমতার কামড়াকামড়ির রাজনৈতিক গেম। একে কেবলমাত্র ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ আখ্যা দিয়ে যারা ব্যাখ্যা
করতে চান তারা এই রাজনৈতিক ক্ষমতার ধারাবাহিতাকে জায়মান রাখতে চান।
প্রত্যেকটি নির্বাচনের পূর্বাপর এইসব
হামলা হয়ে থাকে।
বিগত ৪ দশক ধরে স্বাধীন বঙ্গদেশে এই হয়ে
আসছে রাজনৈতিক ঐতিহ্যের মতো। প্রতিবারই
হিন্দু সম্প্রদায়ই আক্রান্ত হয়। যারাই
নির্বাচনে হারুক জিতুক হিন্দুর বাড়িই লুট হয়। এর একটি কারণ প্রতিপক্ষ দুর্বল। সামাজিকভাবে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে
কাজটি সহজ হয় বলে। ভিকটিমের
একটি সুনির্দিষ্ট চেহারা পাওয়া গেলেও হামলাকারীর চেহারা ভিন্ন, মিশেল। ক্ষমতাচ্যুত, সদ্য ক্ষমতাসীন, আ.লীগ-জামাত-বিএনপি অথবা
এদের ঐক্য সব মিলিয়েই হামলাকারী।
চট্টগ্রামের রাউজানসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলে
বিভিন্ন দলের ছায়ায় ঢাকা একদল দুর্বৃত্তই আছে যারা নির্বাচন মওসুমের অপেক্ষায়
থাকেন লুটতরাজ, খুন
ধর্ষণ করবে বলে। তবে এই খুনি-লুটতরাজকারী তরফটা চাক্ষুস
হামলাকারী হলেও পর্দার আড়ালের নায়ক কিন্তু ভিন্ন কেউ। হামলাকারীরা ব্যক্তিগত কায়েমী স্বার্থেই
হামলা পরিচালনা করে থাকে।
কিন্তু হামলার নীল নকশাকারীদের স্বার্থ
এত ছোট তরফের নয়। এখন অবদি একটি ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’রও কোনো তদন্ত হয়নি। এর কোনো সুষ্ঠু বিচার হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের চ্যাম্পিয়ন দলটি যারা
অন্যের ঘাড়েই বারবার এসব হামলার দায় চাপান তারাও কোনো একটি ঘটনার বিচার করে নাই
কেন? এবার
নির্বাচন পরবর্তী এই সহিংসতা কার বেশি প্রয়োজন ছিলো? সাম্প্রদায়িক ইস্যু উসকে দিয়ে বাংলাদেশের আশু রাজনীতি কোনদিকে
মোড় নিচ্ছে? দেশে
মৌলবাদ জঙ্গিবাদের বিষবৃক্ষ বেড়ে চললে মার্কিন-ভারতের কী কী মুনাফা হয় তার হদিস না
নিয়ে সাম্প্রদায়িক হামলা বলে চালিয়ে দিলে ক্ষমতায় পাকাপোক্ত হতে সুবিধা হয় কি?
No comments:
Post a Comment