Popular Posts

Sunday, September 6, 2015

ওলামা লীগ: আওয়ামী লীগের হেফাজতে ইসলাম!















ওলামা লীগ: আওয়ামী লীগের হেফাজতে ইসলাম!

বশেষে পাওয়া গেছে, আমলীগকে (আওয়ামী লীগ) হেফাজতকারী দল। একটি দল ‘হেফাজতে ইসলাম’ নাম দিয়ে ‘ইসলাম রক্ষা’র নামে যা করতে চায়, তাতে আর কিছু হোক না হোক ধর্মকে পথে বসানোর আর কিছু বাকি থাকবে না।

তেমনিভাবে আওয়ামী লীগকে হেফাজতে রাখার দায়িত্ব নিয়েছে আওয়ামী লীগেরই সৃষ্টি- ‘হেফাজতে আওয়ামী লীগ’ ওরফে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ।

কথায় আছে, আমেরিকা যার বন্ধু, তার আর শত্রুর দরকার পড়ে না। ঠিক তেমনি আওয়ামী লীগের সৃষ্টি আওয়ামী ওলামা লীগ নিজেদের ইসলামপছন্দ দল হিসেবে প্রমাণ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে ৫ সেপ্টেম্বর।

উগ্র সাম্প্রদায়িক সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী হিসেবে জামাত কিংবা হেফাজতে ইসলাম, আল-কায়েদা কিংবা নতুন সৃষ্টি আইএসআইএসকেও হার মানিয়েছে ওলামা লীগ।




শনিবার (০৫ সেপ্টেম্বর-২০১৫) ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ সমমনা ১৩টি দলের উদ্যোগে ২২ দফা দাবিতে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এই মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের ধর্মভিত্তিক সহযোগী এই সংগঠনটির (বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ) সাধারণ সম্পাদক কাজী মাওলানা মো. আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী বলেন, প্রশাসনে হিন্দুত্বকরণ বরদাশত করা হবে না। চাকরির ক্ষেত্রে ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানদের নিয়োগ আনুপাতিক হারে করতে হবে। হিন্দুদের মুসলমানদের চেয়ে বেশি নিয়োগ দিয়ে বৈষম্য করা যাবে না।

‘প্রশাসনে হিন্দুত্বকরণ চলবে না’ মন্তব্য করে ওলামা লীগ সম্পাদক কাজী মাওলানা মো. আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী বলেন, ২০১৩ সালের অক্টোবরে পুলিশের এসআই পদে নিয়োগে ১,৫২০ জনের মধ্যে হিন্দু নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ৩৩৪ জন। ২০১১ সালে জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইতে নিয়োগের ৯৩ জনের মধ্যে ২৩ জনই হিন্দু। সম্প্রতি ৬ষ্ঠ ব্যাচে সহকারী জজ পদে ১২৪ জনের মধ্যে ২২ জন হিন্দু।

তিনি বলেন, এসব বিতর্কিত সিদ্ধান্তে মুসলমান দেশে হেফাজতে ইসলামসহ বিরোধীরা সমালোচনার সুযোগ পাচ্ছে।

একই সঙ্গে মানববন্ধনে বক্তারা ‘হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-ঐক্য পরিষদকে ‘কট্টর সাম্প্রদায়িক সংগঠন’ হিসেবে মন্তব্য করেন।
                                                             ...............................
                                                            ......................................

প্রশাসন হিন্দুদের চক্রান্তে পরিচালিত হয় এমন ইঙ্গিত করে মানববন্ধের বক্তারা বলেন, হিন্দুত্ববাদী চক্রান্তে পা দিয়ে কোরবানর পশুর হাট রাজধানীর বাইরে নেওয়া যাবে না। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অজুহাতে দুই সিটি কর্পোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা হিন্দুত্ববাদী চক্রান্তের শিকার হয়ে কোরবানির পশু জবাই করার স্থান নির্দিষ্ট করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সিদ্ধান্তের ফলে ঢাকা শহরের লাখ লাখ কোরবানি দাতারা দুর্ভোগে পড়বেন।

এছাড়া মানববন্ধনে বিলি করা লিফলেটে বলা হয়েছে, সাম্প্রদায়িক সংগঠন ‘হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ’ সরকারের সিনিয়র মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, পিরোজপুরের এমপি আব্দুল আওয়ালের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।

এলজিআরডি মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির অভিযোগে তার দুই এপিএস সত্যজিৎ মুখার্জি আর মোকাররম বাবুকে বহিষ্কার করেন। মোকাররম গ্রেফতার হলেও সত্যজিৎ টাকা নিয়ে ভারতে পালিয়ে যায়। অথচ সত্যজিতের পক্ষে তার মা মানববন্ধনে দাবি করলো ‘হিন্দু’ বলেই তার ছেলেকে নাকি মন্ত্রী বহিষ্কার করেছে।

 
মানববন্ধনে সাংবাদিক প্রবীর শিকদারকে ‘উগ্র হিন্দুত্ববাদী’ মন্তব্য করে ওলামা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ক্বারী আসাদুজ্জামান বলেন, সত্যজিৎ মুখার্জির পক্ষে দাঁড়ায় উগ্র হিন্দুত্ববাদী ফরিদপুরের সাংবাদিক প্রবীর সিকদার। তার সঙ্গে যোগ দেয় সাম্প্রদায়িক সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।

তিনি বলেন, এ পরিষদের নেতা রানা দাশগুপ্ত গং বিভিন্ন সময়ে সংখ্যালঘু নির্যাতনের সস্তা ইস্যু বানায়।

মানববন্ধনে সাবেক পর্নো তারকা সানি লিয়ন ও ভারতীয় নায়িকা পাওলি দামের আগমন ঠেকাতে সরকারের কাছে দাবি জানান সংগঠনের নেতারা।

ইসলাম বিরোধী ও ধর্ম অবমাননামূলক লেখার জন্য মৃত্যুদণ্ডের আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, স্বঘোষিত ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক অভিজিতের ধর্মব্যবসায়ীদের হাতে ইস্যু তুলে দিচ্ছে।

মানববন্ধনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামের শেষে ‘রহমতুল্লাহি আলাইহি’ যোগ করার দাবি জানান বক্তারা।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী। আরো বক্তব্য রাখেন, মাওলানা আবদুস সাত্তার, লায়ন মাওলানা আবু বকর ছিদ্দিকী, শায়েখ মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফেয়ী, মুজিবুর রহমান চিশতী ও শওকত আলী শেখ সিলিপমপুরী প্রমুখ।

এত কিছুর পরে দেশে কি জামাত-শিবির, হেফাজত, জেএমবি, আনসারউল্লাহ বাংলাটিম, হুজির মতো সংগঠনের আর দরকার আছে! দরকার নেই। কারণ, তাদের দাবিসহ ব্লাসফেমি আইনেরও দাবি জানিয়েছে আওয়ামী লীগের এ সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ।

এরপর জামাত-শিবির, হেফাজত পায়ের ওপর পা তুলে দিয়ে নাকে সরষের তেল দিয়ে ঘুমালেও কোনো সমস্যা হবে না। তাদের দাবি ও বিভিন্ন ইস্যু সরকারপন্থীরাই দাবি হিসেবে তুলেছে। তাহলে বাস্তবায়ন করতে আর কতক্ষণ লাগবে!!

তবে হ্যাঁ, ওলামা লীগের বক্তব্যের কারণে আওয়ামী লীগের গায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তকমা লাগতে শুরু করেছে। এই তকমাই ঘরের শত্রু বিভীষণ কিংবা ফ্রাঙ্কেনস্টাইন হয়ে দাঁড়াবে, তা তাদের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে পরিষ্কার হয়ে উঠেছে।

যে দ্বিজাতি তত্ত্ব, সাম্প্রদায়িকতা মুক্তিযোদ্ধারা ১৯৭১ সালে চিরকালের মতো কবর দিয়েছিলেন, সেটিই আবার ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িকতাকে কাজে লাগাতে চায়, আওয়ামী লীগের ঘাঁপটি মারা দলটি। তাদের কারণে সাম্প্রদায়িক হামলা (সংঘর্ষ নয়। কারণ, বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ হয় না; হয় সাম্প্রদায়িক হামলা, বিশেষ বিশেষ ইস্যুকে কেন্দ্র করে) হলে অবিশ্বাসের কিছুই থাকবে না।

কারণ, আওয়ামী লীগের এই দলটি সাম্প্রদায়িকতাকে উস্কে দিচ্ছে, ঠিক ৪৭-এর পরে যা হয়েছে। যা ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হয়েছে। 
                                     ............................


ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এর উদাহরণ, পাকিস্তান, ইরাক, ইয়েমেন, ভারতসহ আরো অনেক দেশ।

জাতি হিসেবে কি তবে আমরা আবারও পিছিয়ে পড়ছি? আমাদের জাতিকে সুশিক্ষিত করতে দেবে না রাজনীতির ঘুঁটি? যে দেশ সুফিবাদের কারণে ধর্মে মানবিকতা লাভ করেছিল আমাদের স্বদেশ বাংলাদেশ, তা কি আর সোনার বাংলা হবে না?

তাহলে কি আমরা আর বলতে পারবো না- ‘সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি’। আমরা কি আর বাঙালির বাংলাদেশ দেখতে পাবো না? পাহাড়ি/সমতল আদিবাসীরা আর বলতে পারবে না, বাংলাদেশ আমার দেশ?

হিন্দু, খিস্ট্রান, বৌদ্ধ, মুসলিম কি আর বলতে পারবে না, ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’/ সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমিএত স্নেহ কোথায় গেলে পাবে কেহ!!!’

এ ব্যাপারে কী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল হানিফ এবং বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত????
                                            ...................



 
Contd.

No comments:

Post a Comment