Popular Posts

Friday, November 22, 2013

প্রশ্নটা যখন নাগরিকতা আর দর্শনের, তখন আমি...

 প্রশ্নটা যখন নাগরিকতা আর দর্শনের, তখন আমি...

(কারণটা অত্যন্ত স্পষ্ট, ঘৃণ্য রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য যুগে যুগে রাজনীতিবিদরা দেশের মানুষের মধ্যে মাতমের সৃষ্টি করেনএর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন ধর্মকেনিজেদের গদি ঠিক রাখতে কিংবা আরেক গোষ্ঠীকে ক্ষমতা থেকে টেনে-হিঁচড়ে নামাতে পবিত্র ধর্মের নামে অপবিত্র আর অধর্মের কাজটি করেন

পৃথিবীর অনেক দেশেই হয় 'ধর্ম' (Religion) নয় 'বর্ণ' (Color) কিংবা 'অভিবাসী' (Immigrants) বা আদিবাসী (Aboriginal) অথবা 'সংখ্যালঘু' (Minority) ভেদে অত্যাচার নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন, লুটপাট চালানো হয়

প্রশ্নটা যখন নাগরিকতা আর দর্শনের, তখন আমি...

হ্যাঁ, আর সব ধর্মের আস্তিক লোকেরা ঘৃণ্য উন্মাদনা সৃষ্টির কাজটা করেনহোক সে হিন্দু, হোক সে মুসলিম, হোক সে খ্রিস্টান, হোক সে ইহুদি, হোক সে বৌদ্ধ, কেউই কারো হাতে নিরাপদ নয়!

এরপর আবার যে দেশে শুধু একটি ধর্মের লোক বলা চলে ৯০ শতাংশ, সে দেশে নিজ ধর্মের অন্য গোত্রের মানুষদের পুড়িয়ে মারা, বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়া, আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়। আরো একটা ধরন আছেযখন আর কিছুই করার থাকে না, তখন সবল দুর্বলের ওপর অত্যাচার-হামলা চালায়

অবাক হলেও সত্যি, এ কাজগুলো যারা করেন, তারা সেই সে ধর্মের আস্তিক মানুষব্যতিক্রম শুধু নাস্তিক আর বামপন্থিরা

প্রশ্ন জাগে, অন্য ধর্মের বর্ণের মানুষ পুড়িয়ে-জ্বালিয়ে নিজের ধর্ম-বর্ণকে বড় করা যায় নামানুষ মানুষকে ভালো না বাসলে তা ধর্মের দোষ নয়সব ধর্মের সারবত্তাই ভালো কাজ, সততাকে উৎসাহিত করাকিন্তু কেন এমন হয়? কেন? এরই অনেক উত্তরের একটি হচ্ছে নিচের একটি মন্তব্য, যা সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুক থেকে নেওয়া হয়েছে

নিচের লেখাটা পড়ে বলুন তো, আপনি কী চান? বিচার করুন তো, আপনি কোনপক্ষের মানুষ? (!!)

বিনয়াবনত-

আশিস বিশ্বাস, পরিচয়- একজন মানুষ, মানবতাই যার ধর্ম)

২. 


তখন আমি...

Sheikh Asman

"সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এক জিনিস, এক তরফা সন্ত্রাস আরেক জিনিস। এই দেশে যেটা হয়, সেইটা একতরফা সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস- যার লক্ষ্যবস্তু একটা সম্প্রদায়, যারা প্রতিরোধ করতে অক্ষম।

যাই হউক, কথা সেইটা না। কথা হইলো, এই ধরনের ঘটনা ঘটলেই কিছু মানুষ আইসা বলে, "এই দেশের সবাই ভাই-ভাই, যারা এইগুলি ঘটায় তারা পচা"- পুরা ঘটনাটাকেই একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে চালিয়ে দিয়ে বিষয়টার গুরুত্ব নষ্ট করে দেয়

আরেক দলের মনভাব হল এই রকমঃ  হুম, এত বেশি মারাটা ঠিক হয় নাইকিন্তু শুনছি, হিন্দুরাও নাকি "এইরকম" করছে।

বরিশালের ঘটনাটা যদি দেখেন, এই রকম অনেক মডারেট বাঞ্চুত পাবেন, যারা এই ধরনের হামলাতে মৌন সমর্থন দিচ্ছে এবং এরা সর্বদাই মুখে বলে, আমরা শান্তি চাই, কিন্তু মনোভাব হল---তুমি আমারে চিমটি দেওয়া ভান করলা, তাই তোমারে পিটানির অধিকার আমার আছে

আরও এক পিস, আরেক ডিগ্রি বাড়াসারা দুনিয়ার কই কি হইছে, বা আগে হইছিল, সেই গুলারে রেফারেন্স ধইরা বলবে, তাই, হিন্দুর ঘরবাড়ি পুড়ানো জায়েজ আছে

এর থেকেও আরও বেশি সুশীল কিছু বীর্যহীন পশু আছেকোন ঘটনা শুনলে এরা নগদে দুঃখ প্রকাশ কইরা তারপরে বলবে- কিন্তু দুনিয়ার অনেক জায়গা (স্পেশালি ভারত) থেকে এই দেশে তুলনামূলকভাবে হিন্দুরা বেশি সুখে আছে


জামায়াত-শিবির ধর্তব্যের বিষয়ই না এইখানেএরা আপাত দৃষ্টিতে ভালকেন? কারণ এরা মাঝে-মধ্যে মুখে বলে দেয় 'হিন্দুর ঘরবাড়ি পুড়লে সওয়াব কামানো যাবে", অন্তত মুখোশ পরে ছুরি চালায় নাউপরের তিন ক্যাটাগরিতেই জামায়াত এবং ছুপা জামায়াত পড়ে যায় অবশ্য

এখন নতুন একটা সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানো হচ্ছে, প্রশাসনে আওয়ামী লীগ বেশি হিন্দু নিয়োগ করছে- এই রকম অপপ্রচার

যুক্তি দিয়া এই অপপ্রচারের জবাব দিয়ে সময় নষ্ট করতে আমি নারাজশুধু এইটাই বলব, এই প্রচারটা বেশি হচ্ছে পুলিশকে নিয়েকারণ? সামনের দিনগুলিতে পুলিশের উপরে হামলা হবে- এরা হিন্দু এই প্রচারণা চালিয়ে এবং নির্বাচনে একবার যদি বিএনপি ক্ষমতাতে আসে, তাহলে সবার আগে প্রশাসনে থাকা হিন্দুদের উপরে ঝড়টা যাবেকিভাবে বুঝলাম? বিএনপির পেইজ থেকে গত দুই সপ্তাহে দুইটা তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল একটাতে ছিল সকল হিন্দু বিসিএস ক্যডার এর নাম। আরেকটাতে ছিল সদ্য নিয়োগ পাওয়া হিন্দু এসআইদের নাম

যাই হউক, বিষয় হচ্ছে, স্বাধীনতার পরে কোন সরকারই এই ঘটনাগুলির বিচার করেনিবিএনপি-জামায়াত উৎসাহ দিয়েছে, আওয়ামী লীগ শুধু মলম লাগিয়েছে ক্ষতে, মাঝে মাঝে চুলকিয়ে ঘাও করেছে

এর থেকে মুক্তির উপায় কি? উপায় একটাইহয় আপনি আপনার চরম সাম্প্রদায়িকতার প্রকাশ ঘটিয়ে সবার সামনে বলেন, আপনি হিন্দুদের (বা অন্য কোন ধর্মের মানুষের) সাথে একত্রে এক দেশে বসবাসকে অস্বীকার করেন, অথবা তাদের বিরুদ্ধে হওয়া হামলাকে নিজের শরীর দিয়ে প্রতিরোধ করুন

আর হিন্দুদের একটা বিষয় বোঝা উচিত এখন থেকেমার খেয়ে হজম করে গেলে, আরও বেশি মার খেতে হয় আপনার বাড়ি পুড়ছে, আপনার বউ-মেয়ে ধর্ষিত হচ্ছে, আর কি হারানোর ভয় করেন আপনি? কি আছে হারানোর? জীবন? মেরুদণ্ডহীনভাবে বেঁচে থাকার চেয়ে সম্মানজনকভাবে মরে যাওয়াটা অনেক গুণে বেশি সম্মানের

এরপরেও,

সারাদেশে ২০১২ সালে ঘটা প্রায় প্রতিটা হামলার ঘটনাতে কিছু ব্যক্তিগত তদন্ত ছিল আমারসেখানে দেখেছি, কিছু মানুষ (ধর্মে মুসলিম) নিজেরা এগিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু সংখ্যায় কম থাকার কারণে শেষ পর্যন্ত পারেননি

আমার বিশ্বাস, এই দেশে এই রকম মানুষের সংখ্যাই বেশি।"

Nirjhor Mojumdar

No comments:

Post a Comment