Popular Posts

Friday, November 4, 2016

বেতন-ভাতার দাবিতে কঠোর আন্দোলনে যাচ্ছে বাংলামেইল সাংবাদিক-কর্মচারীরা




বাংলামেইলের আটক সাংবাদিক প্রান্ত পলাশ, নির্বাহী সম্পাদক মাকসুদুল হায়দার চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক
দেশের অন্যতম একটি শিল্পগোষ্ঠী আজিম গ্রুপের খামখেয়ালিপনাতে কয়েক মাস ধরে অর্ধাহরে-অনাহারে রয়েছেন বন্ধ থাকা নিউজ পোর্টাল বাংলামেইল২৪ডটকমের অন্তত ১৫০ সংবাদকর্মীর পরিবার।

২০১২ সালের ২৬ জানুয়ারি তৎকালীন স্পিকার অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ নিউজ পোর্টালটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। 

গত ৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে গুজবনির্ভর সংবাদ পরিবেশন করায় পোর্টালটি বন্ধ করে দেওয়া এবং এ সময় পোর্টালটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকসহ ৩ সাংবাদিককে আটক করা হয়। 

আটক হওয়া ৩ সাংবাদিক জামিনে দ্রুত মুক্তি পেলেও বন্ধ রয়েছে নিউজ পোর্টালটি। সেই সঙ্গে আজও পরিশোধ করা হয়নি সংবাদকর্মীদের ন্যায্য পাওনা বেতন-ভাতা। বাংলামেইল২৪ডটকমের মূল প্রতিষ্ঠান আজিম গ্রুপ সংবাদকর্মীদের পাওনা বেতনভাতা দিতে টালবাহানা করছে।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলামেইলের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট খালিদ হোসেন বলেন,  ‘দেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী আজিম গ্রুপের খামখেয়ালিতে কয়েক মাস ধরে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন বাংলামেইলের সংবাদকর্মীরা। কয়েকজন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পেলেও অধিকাংশই এখনো কর্মহীন।’

তিনি মন্তব্য করেন, ‘অবাস্তব সম্পাদকীয় নীতি অনুসরণ করায় বাংলামেইল পোর্টালটি বন্ধ হয়েছে। কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতার কারণে বাংলামেইল বন্ধ হলেও সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আজিম গ্রুপ  ক্রমাগত পৈশাচিক আচরণ করে চলেছে।

খালিদ হোসেন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আমাদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ না করা হলে আমরা কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো। উদ্ভুত পরিস্থিতির দায়ভার আজিম গ্রুপকেই নিতে হবে।’

অন্যদিকে, আজিম গ্রুপের এই আচরণের নিন্দা জানিয়েছে, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিউজে)। সংগঠনটির ডিউজে/প্রেরি/০০১(১৬) স্মারকে  ২ নভেম্বর বুধবার ‘বাংলামেইলের সাংবাদিক-কর্মচারীদের হয়রানির নিন্দা ডিউজে’র’ শিরোনামে এক বিবৃতিতে দেয়া হয়। 


ডিউজে’র দফতর সম্পাদক মনিরুজ্জামান উজ্জ্বলের সই করা বিবৃতিতে বলা হয়, বিনা নোটিশে গত তিন মাস যাবত বাংলামেইল২৪ডটকম বন্ধ রাখা ও সাংবাদিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা না দিয়ে হয়রানি করার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিউজে)।

বুধবার এক বিবৃতিতে ডিউজে সভাপতি শাবান মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়া বাংলামেইল২৪ডটকম বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ৩ মাস (আগস্ট, সেপ্টেম্বর. অক্টোবর ২০১৬) পার হলেও কর্মীদের বেতন-ভাতা দেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এমনকি বিগত ঈদ-উল আজহায় সাংবাদিক-কর্মচারীদের উৎসব ভাতাও (ঈদ বোনাস) দেয়া হয়নি। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কেও কর্মরত সাংবাদিক-কর্মচারীদের জানানো হয়নি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বারবার তাগিদ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

তারা বলেন, ডিইউজে বাংলামেইল কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে কর্মরত সব সাংবাদিক-কর্মচারীকে ৩ মাসের বেতন-ভাতা, বকেয়া বোনাস ও প্রাপ্য সুবিধাদি দেয়া ও প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ অবস্থান সম্পর্কে সাংবাদিক-কর্মচারীদের জানাতে হবে। নইলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আজিম গ্রুপের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। 
                         ........................................................................

নিউজ লিংক:   
বাংলামেইল বন্ধ: চাপ অনুভব করবে গোটা সংবাদমাধ্যম

Tuesday, March 29, 2016

তনুর 'প্রকৃত' হত্যাকারী! আরেক জজমিয়া!

আসিতেছে...আসিতেছে...!

তনুর 'প্রকৃত' হত্যাকারী! আরেক জজমিয়া!

- আশিস বিশ্বাস, অনলাইন সংবাদকর্মী


ছবি- সৌজন্যে- বাংলামেইল

আসিতেছে! আসিতেছে...! কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া কলেজ শিক্ষার্থী ও সংস্কৃতিকর্মী সোহাগী জাহান তনু'র 'প্রকৃত' হত্যাকারী...! যে কোনো সময় তনু'র 'প্রকৃত' ধর্ষক ও হত্যাকারীকে জনসমুখে তুলিয়া ধরা হইবে...

তনুর পরিবারের সদস্যরা জানাইয়াছেন, কোনোকালে তনুকে প্রেমের প্রস্তাব কেউ দিয়াছিল কিনা এবং তাহার নাম জানার জন্য কাহারা কাহারা যেন তাদের চাপ দিতেছে।তাহারা জানিয়াছেন, একজন এককালে দিয়াছিল বটে, তবে সে তনুকে কখনো উত্ত্যক্ত করে নাই এবং সে এখন এলাকাতেও থাকে না।


এদিকে, অন্য একটি সূত্র নাকি সংবাদমাধ্যমকে জানাইয়াছে, কাহাকে যেন কাহারা ধরিয়া ফেলিয়াছে! সে নাকি হয়ত কিংবা অবশ্যই ঘটনার পর ঘটনাস্থলের আশপাশ দিয়া ঘোরাফেরা করিবার সময় কাহারা যেন দেখিয়া ফেলিয়াছিল। সে কারণে বোধ হয়, আমরা অবশ্যই আশাবাদী হইতে পারি...! 

এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলিয়া দিয়াছেন, শিগগিরই হয়ত সুখবর দিতে সক্ষম হইবেন। আমরা ভাবিতেছি, আবার কোনো জজমিয়া আসিবেন না তো!

কিন্তু জজমিয়া ঘটনার সময় কোথায় ছিলেন সংবাদমাধ্যম একসময় হয়ত ঠিকই জানাইয়া দিবে, যেমনটা বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে ঢাকার শেরাটনের সামনে বিআরটিসি বাসে পাউডার গান দিয়া আগুন ধরাইয়া ১১ জন বাসযাত্রীকে হত্যার খবর দিয়াছিল।

ছবি- সংগৃহীত
তখন কাহারা যেন জানাইয়াছিল, আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্দেশে জজমিয়া বিআরটিসির বাসে গানপাউডার ছিটাইয়া আগুন ধরাইয়া দিয়াছিল। এতে ১১ জন বাসযাত্রী পুড়িয়া মারা গিয়াছিল! তাহাকে সংবাদমাধ্যমের সামনে চিড়িয়ার মতো প্রদর্শন করানো হইয়াছিল। ’আসল’কে ধরিয়াছে বলিয়া, কাহারা যেন আমোদিত হইবার পর আমোদ না কাটিতেই শয়তান সংবাদমাধ্যমগুলা কোথা হইতে কোন খবর ধরিয়া আনিয়া কহিলো যে, আহা, জজমিয়া বাসে আগুন ধরাইবার সময় জেলে অতীব সম্মানের সঙ্গে অবস্থান করিতেছিলেন।

সেই খবর জানিতে পারিয়া কাহারা যেন জজমিয়াকে কহিলো, এই ব্যাটা, তুই তখন কোথায় ছিলি... ? জজমিয়া কহিলো, স্যার, আমি তো তখন জেলে ছিলাম, স্যার! তখন তাহারা ধমক দিয়া কহিলো, এই শালা, আগে কবি না তা!



কারণ, তাহারা হয়ত জানিবে, বাংলাদেশ ব্যাংকের জোহা সাহেবের মতোই হয়ত এই জজমিয়া ঘটনার পর ঘটনাস্থলের আশেপাশেই সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা কিংবা আগে থেকেই প্রস্তুতি লইয়া চুপচাপ জঙ্গলে বসিয়াছিল কিনা, তাহা যাচাই করিবার সুযোগ পাইবে না।

অতএব, আর কিছু করার নাই, জজমিয়ার...! এরপর বিশেষ দলের বিশেষ ছাত্রসংগঠন পিথাগোরাসের মতোই ভাঙা রেকর্ডের মতো আনন্দে মিছিল করিয়া বলিতে থাকিবে, 'ইউরেকা, ইউরেকা...পাওয়া গিয়াছে, পাওয়া গিয়াছে...!'

ছবি- সংগৃহীত
এরপর আমরা 'ব্লাডি জনগণ' মুখে আঙুল চুষিতে তৃপ্তির ঢেকুর তুলিবো- বাহবা, বাহবা, পাওয়া গিয়াছে, পাওয়া গিয়াছে...! তনুর 'প্রকৃত'/'আসল' ধর্ষক ও হত্যাকারীকে অবশেষে ধরা হইয়াছে...এইবার তাহাকে উপযুক্ত/দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেওয়া হইবে...!

ছবি- সংগৃহীত
বি.দ্র.- আগের জজমিয়া সামান্য‌ চিছকে চোর হিসেবে চুরি করিতে গিয়া ধরা খাইয়া বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে জেলের ভেতরে থাকিয়া পরম ঈমানদার ব্যক্তি সাঈদীর মতো আকাশের 'রাতের সূর্য'-এ অবস্থান করিয়া আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্দেশে রাজধানীর শেরাটনের হোটেলের সামনে আসিয়া যাত্রীবাহী বিআরটিসির দোতলা বাসে গান পাউডার ছিটাইয়া ১১ জন বাসযাত্রীকে পুড়াইয়া মারিয়া ফেলিয়াছিলেন। 


বেচারা আসল জজমিয়া...! ছিচকে চোর হইয়া চুরি করিতে গিয়া ধরা খাইয়া ইতিহাসে নাম লেখাইয়াছে। কিন্তু তিনি ঠিকমতো হিসাব করিতে পারেন নাই। তাহা পারিলে তিনি চার হাজার কোটির চেয়ে ৮০৮ কোটি টাকাকে বড় হিসাবে দেখিতে পাইতেন। বিশেষ আদরও হয়ত পাইতেন, যেমনটা পাইয়াছেন, হলমার্ক গ্রুপের হর্তাকর্তারা...কী আনন্দের দেশ...আহা! বেশ বেশ বেশ...!!


ছবি- সংগৃহীত
ছবি- সংগৃহীত
ছবি- সংগৃহীত
ছবি- সংগৃহীত
ছবি- সংগৃহীত
ছবি- সংগৃহীত
খবরটি তৈরি করতে যাদের তথ্য, ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মতোই বলি, একটি দেশের সাধারণ মানুষের স্বত:ফূর্ত আন্দোলনেই আস্থা সবার। তরুণ সমাজ ‘জাতির অতন্দ্র প্রহরী...!’

জয় বাংলা! জনতার জয় অবশ্যম্ভাবী...!! জয় গণজাগরণ মঞ্চ, শাহবাগ-২০১৩!


Saturday, March 5, 2016

অভিজিৎ হত্যা: যে নারীর সন্ধান পায়নি এফবিআই!

অভিজিৎ হত্যা: যে নারীর সন্ধান পায়নি এফবিআই!

আশিস বিশ্বাস, অনলাইন সংবাদকর্মী
Mail: ashishbiswas@rocketmail.com, Twitter/Ashishkbiswas, Facebook/ashish.biswas.33

ছবি- সংগৃহীত

ঢাকা: ব্লগার, বিজ্ঞান-লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায়ের হত্যার পর একবছর পার হয়ে গেছে। তারপরও হত্যাকারীদের সম্পর্কে কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি, আমাদের দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে আটটার দিকে অভিজিৎ রায় ও তার স্ত্রী রাফিদা আহম্মেদ বন্যা বাংলা একাডেমি আয়োজিত একুশে বইমেলা থেকে বের হয়ে আসেন।

এরপর দুজনে ফুটপাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে শাহবাগের দিকে আসছিলেন। পথিমধ্যে, টিএসসি এলাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট পার হওয়া মাত্র বোরখা পরা আততায়ীর চাপাতির মুখে পড়েন তারা।

ছবি- সংগৃহীত
বোরখা পরা আততায়ী চাপাতি দিয়ে অভিজিৎ রায়ের মুখ ও মাথা বরাবর উপর্যুপরি কোপাতে থাকলে তিনি ফুটপাতেই লুটিয়ে পড়েন। রক্তে ভেসে যেতে থাকে এলাকা। এ সময় স্ত্রী বন্যা চাপাতির কোপ থেকে অভিজিৎ রায়কে বাঁচাতে গেলে আততায়ী তার হাতেও কোপ মারেন। এতে করে তার হাতের একটি আঙুল কেটে রাস্তায় পড়ে যায়।

পুরো ঘটনাটি খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেন তুলি নামে এক নারী (পুরো নামটি নিরাপত্তাজনিত কারণে উল্লেখ করা হলো না)।

উপর্যুপরি কোপের আঘাত দেখে তিনি প্রতিবাদ করতে উদ্যত হন। এক পর্যায়ে চাপাতিসহ বোরখা পরা আততায়ীর হাত চেপে জাপটে ধরেন।

কিন্তু আততায়ী তাকেও কুপিয়ে হত্যার হুমকি দেয় ও  তলপেটে লাথি মেরে তাকে রাস্তায় ফেলে দেন। এরপর আততায়ী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট দিয়ে পালিয়ে যান।

এ ঘটনার পর পরই অভিজিৎ রায়কে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেদিন রাতেই তিনি মারা যান।

অভিজিৎ হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী নারী- তুলি। ছবি- হিমু

এদিকে, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই নারী তুলি বিবেকের তাড়নায় এবং নিজের অস্থিরতা চেপে না রাখতে পেরে পরদিন সকালে (২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫) অভিজিৎ রায়কে যেখানে হামলার শিকার হন, সেখানে ছুটে আসেন। নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উদভ্রান্তের মতো তিনি শুধু বলতে থাকেন, ‘এত রক্ত আর কখনো আমি দেখিনি। এত রক্ত আর কখনো আমি দেখিনি!’

ছবি দেখে বোঝা যায়, তুলি (৪০) উচ্চ শিক্ষিত নারী। বিলাপ করার পাশাপাশি বার বার মূর্চ্ছা যাচ্ছিলেন তিনি। জড়ো হওয়া সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সংবাদকর্মী ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনও সে সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

ওই নারীকে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং সংবাদকর্মীদের কাছেও অভিজিৎ রায় হত্যা ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি।

 ২.
ছবি- সংগৃহীত
অভিজিৎ রায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ছিলেন। তার বাবা অজয় রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানে অধ্যাপনা করেছেন।

যখন বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিজিৎ রায় হত্যার কোনো কূলকিনারা করতে পারছিলেন না, তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘটনা তদন্তে সহযোগিতার প্রস্তাব দেয়। বাংলাদেশ তা সাদরে গ্রহণও করে।

এরপর অভিজিৎ রায় হত্যা রহস্য উদঘাটনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের কয়েকজন সদস্য বাংলাদেশে আসেন। অভিজিৎ রায়কে যেখানে হত্যা করা হয়, সেই জায়গাটিও পরিদর্শন করেন তারা। ওই সময় কিছু নমুনাও সংগ্রহ করেন এফবিআই সদস্যরা।

বাংলাদেশে অবস্থানকালে এফবিআই সদস্যরা জানতে পারেন, অভিজিৎ রায়কে হত্যার সময় এক নারী খুব  কাছাকাছি থেকে ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন। তারা এ সময় ওই নারীর সঙ্গে কথা বলতে চান। কিন্তু পুলিশ তাদের জানায়, তারা সেই নারীর সন্ধান আর পাচ্ছেন না।

প্রত্যক্ষদর্শী নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন ডিএমপি পুলিশ সদস্য, ছবি- হিমু
কিন্তু এই তথ্য প্রকাশের পর বোঝা যাবে, পুলিশ আসলে কি সেই নারীর সন্ধান পাচ্ছে না; নাকি এড়িয়ে যেতে চাইছেন তারা, সে বিষয়ে বিতর্ক উঠতেই পারে!

বলে রাখা দরকার, একজন অনলাইন সংবাদকর্মী হিসেবে ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে আমি নিউজরুমে উপস্থিত ছিলাম। এ সময় আমাদের মিডিয়া হাউসের সংবাদকর্মী হিমু সকালে বুয়েটের একটা অ্যাসাইনমেন্ট কাভার করার জন্য ওই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলে লোকজন দেখে সেখানে যান এবং হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী ওই নারীর সঙ্গে কথা বলেন। এরপর  তুলি নামে ওই নারীর সমস্ত বর্ণনা নিউজরুমে ফোনে জানিয়ে দেন।

এরপর সংবাদকর্মীর বর্ণনা মতো সংবাদও তৈরি করা হয়। হিমু ওই নারীর কয়েকটি ছবি তুলে নিউজরুমে পাঠিয়ে দেন। ওই ছবিতে দেখা যায়, সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনও ওয়াকিটকি হাতে ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।

তাহলে প্রশ্ন, গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন যাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন, তাকে কীভাবে খুঁজে পাবেন না, তা বোঝা মুশকিল! এটা কোনোমতেই কারো কাছে বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না।

পরবর্তীতে ওই নারীর নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন দিক চিন্তা করে সংবাদটি আর প্রকাশ করা হয়নি।

ছবি- সংগৃহীত
এ সময় বার বার বিলাপ করে শুধু তিনি বলতে থাকেন, ‘এত রক্ত আর কখনো আমি দেখিনি। এত রক্ত আর কখনো আমি দেখিনি!’

প্রশ্ন জাগে, যে তথ্য সংবাদকর্মীদের হাতে আছে, তার চেয়ে বেশি তথ্য পুলিশের কাছে থাকার কথা। কারণ, পুলিশ ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে; ছবিই তার প্রমাণ। তাহলে ওই নারীকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, এটা কাউকে কি বিশ্বাস করাতে পারবেন তারা!

সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের কাছে তুলি নামে সেই নারীর ছবি, নাম ও তিনি কোথায় থাকেন, সে তথ্য আছে। তাহলে পুলিশের কাছে থাকবেনা, এটা কেউ কি মেনে নেবেন!?

সংবাদকর্মী হিমু তখন জানিয়েছিলেন, পরের দিন (২৭ ফেব্রুয়ারি) আনুমানিক সকাল সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তুলি নামে ওই নারী অভিজিৎ হত্যার বর্ণনা দেন।

অভিজিৎ রায় হত্যার বর্ণনা দিতে গিয়ে বার বার মূর্চ্ছা যান তুলি, ছবি- হিমু

অভিজিৎ রায় হত্যার বর্ণনা দিয়ে তুলি বলেন, ‘আমি এত রক্ত কখনো দেখিনি। চাপাতি দিয়ে প্রথমে ভাইকে (অভিজিৎ রায়) কোপায়। তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে গেলে বৌদির (বন্যা) গলায় কোপ দেয় তারা।’

তিনি বলেন, তাদের (অভিজিৎ ও বন্যা) ওপর হামলাকারী ব্যক্তি বোরখা পরে ছিলেন। তার পিঠে একটি ব্যাগ ছিল। হামলাকারীর ঠিক পেছনেই অন্য একজন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিল।

হামলার পর লোকজন জড়ো হলে হামলাকারীরা চলে যায়।

হামলা চলাকালে একটু দূরেই অবস্থান করছিলেন জানিয়ে তুলি বলেন, ‘বোরখা পরা ওই ব্যক্তি পালানোর চেষ্টা করলে আমি তার হাত চেপে জাপটে ধরি। এতে আততায়ী ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকেও মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে পেটে লাথি মেরে ফেলে দেয়। এতে আমি পড়ে গেলে তারা পালিয়ে যায়।’

বার বার মূর্চ্ছা যাওয়ার কারণে তুলি কিছুই বলতে পারছিলেন না। চেতনা ফিরলে বাকরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি শুধু উত্তর দেন।

ছবি- সংগৃহীত
তুলি বলেন, অভিজিতের ওপর হামলার সময় বন্যা হাত দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করলে চাপাতির কোপে তার হাতের আঙুল কেটে মাটিতে পড়ে যায়। অন্যদিকে, অভিজিৎ রায়ের মাথার পেছনে চাপাতি দিয়ে কোপ দিলে তার মাথার মগজ ফুটপাতে ছিটকে পড়ে।

এফবিআই সদস্যরা ওই নারীর সন্ধান জানতে চাইলে তার কোনো সন্ধান দিতে পারেনি বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। কথা হচ্ছে, যে তথ্য সংবাদকর্মীরা জানতে পারলেন, সে তথ্য গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরাও জেনেছিলেন। তাহলে কেন ওই নারীকে খুঁজে পায়নি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশ্নটা কিন্তু সেখানেই।

এত তথ্য থাকার পরেও অভিজিৎ রায় হত্যাকারীরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে তাহলে...!?

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, মার্চ ০৫, ২০১৫

Sunday, February 21, 2016

দেশটা কি মস্করার নাকি চাটুকারিত্বের!


 দেশটা কি মস্করার নাকি চাটুকারিত্বের!

মাহফুজ আনাম: সম্পাদক দ্য ডেইলি স্টার

আশিস বিশ্বাস, অনলাইন সংবাদকর্মী, mail: ashishbiswas@rocketmail.com

দেশটা আসলে মস্করার হয়ে গেছে। সে কারণে অকারণেই এত এত মস্করা করা হচ্ছে। অথবা বলা চলে, দেশে এত চাটুকার যে, শুধু গিজগিজ করছে। এক চাটুকারের সঙ্গে আরেক চাটুকারের ধাক্কা লাগছে। তা নাহলে ১/১১-এর সময়কার একটি সংবাদের জন্য দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে এত এত মামলা হচ্ছে কেন!

ওই আমলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার সরবরাহ করা সংবাদ যাচাই না করে প্রকাশ করায় শতাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

কিন্তু যারা সংবাদটি প্রকাশের জন্য দিয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে একটা শব্দও উচ্চারিত হচ্ছে না কেন‍! মামলা তো আরো পরের ব্যাপার! সবার আগে তো ওই গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধেই মামলা হওয়া উচিত, মিথ্যা ও বানোয়াট প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য সংবাদমাধ্যমে দিয়েছিল বলে! কিন্তু কই...! তা তো হচ্ছে না! কিন্তু কেন! 


তথ্য যাচাই না করে তা ডেইলি স্টারে প্রকাশ করা করা হয়েছিল এবং এটা ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন, পত্রিকাটির সংবাদ মাহফুজ আনাম

তবে তিনি এটাও বলেছেন যে, ওই সংবাদে লেখা হয় যে, 'এ তথ্য নিরপেক্ষ কোনো সূত্র থেকে যাচাই করা সম্ভব হয়নি'। তা তিনি এটিএন নিউজ চ্যানেলে আলোচনাকালে সরাসরিই বলেছেন। অর্থাৎ সংবাদ প্রকাশের নীতি মেনেই সংবাদটি প্রকাশ করেছেন। তবে সেটি আরো যাচাইবাছাই করা উচিত ছিল। সে কারণে বিনয়বশত ডেইলি স্টারের সম্পাদক বলেছেন যে, সেটি ছিল ভুল এবং তার জন্য তিনি দুঃখিত। এরপরে তো আর কোনো কথা চলে না।

যখন কোনো নিরপেক্ষ সূত্র থেকে তথ্যের সত্যতা যাচাই করা সম্তবপর হয় না, তখন এ কথা উল্লেখ করাই যে কোনো সংবাদমাধ্যমের নৈতিকতা; যাতে পাঠক বুঝতে পারেন যে, সংবাদমাধ্যম তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে সক্ষম হয়নি। তা যে কোনো কারণেই হোক না কেন। সে ক্ষেত্রে ডেইলি স্টার সেই নৈতিকতা মেনেই সংবাদটি প্রকাশ করেছিল। তারপরও মাহফুজ আনামকে যেভাবে মৌমাছির মতো আক্রমণ করে মামলা দেওয়া হচ্ছে, সেটি এক ধরনের অতিউৎসাহী কর্মকাণ্ড। সোজা কথা বলা যায়, এগুলো আসলে এক ধরনের নির্দয় মস্করা কিংবা দলীয় নেতৃত্বকে খুশি করতে চাটুকারিতা। এ ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না একে। 

ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম সেদিন কী বলেছিলেন টেলিভিশন আলোচনায়, সে বক্তব্যটি শুনুন নিচের লিংকে দেওয়া ইউটিউব থেকে-

এটিএন নিউজকে মাহফুজ আনাম

এটা নিয়ে সাধারণ মানুষ কিংবা সংবাদকর্মী কিংবা মানবাধিকার সংস্থা অথবা যার বিরুদ্ধে সংবাদটি প্রকাশ করা হয়েছিল, তিনি কিন্তু একটা শব্দও উচ্চারণ করেননি। অর্থাৎ যার মানহানি হয়েছে বলে মামলা করতে পারতেন, তিনি একেবারেই চুপ।

যাদের কথা বলা হলো, তারা সবাই-ই জানেন, কী পরিস্থিতিতে তা করতে হয়েছে। যখন আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি ক্ষমতায় থাকে, তখনও কোনো সংবাদমাধ্যমই স্বাধীনতা ভোগ করে না। যে দল যখন ক্ষমতায় থাকে, তারা সে সময় তাদের বিরুদ্ধ সংবাদমাধ্যম বন্ধ করে দেয়।

বর্তমান আওয়ামী লীগের সময় ‘ইসলামিক টিভি’, ‘দিগন্ত টিভি’ ‘আমার দেশ’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ‘একুশে টিভি’ তারেক রহমানের বক্তব্য সরাসরি প্রচারের পর অন্য অভিযোগে তার খোলনলচে বদলে দেওয়া হয়েছে। একুশে টিভি নামটা আছে। আর কিছুই নেই।

আবার বিএনপি আমলে তখনকার টেরিস্ট্রিয়াল একুশে টিভির লাইসেন্স অবৈধ বলে তার সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তখন দেশের পাঁচটি শহর থেকে একযোগে প্রকাশ হতো যে জনপ্রিয় ‘দৈনিক জনকণ্ঠ’, তাকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করে এর জীবন বের করে দেওয়া হয়েছে।

এবার আসি, সামরিক শাসনামলের কথায়। এদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের কোনো দেশেই যখন কোনো সামরিক শাসন জারি থাকে, তখন যেমন কথা বলার অধিকার থাকে না, তেমনি সংবাদমাধ্যমও তাদের নিজেদের সংবাদ প্রচার করতে পারে না। তাদের বাধ্য করা হয়, সামরিক শাসকদের তালিকা, টেলিফোন কিংবা তাদের নির্দেশমতো সংবাদ প্রচার করার। কোন সংবাদ প্রচার করা যাবে কিংবা যাবে না কিংবা কোন সংবাদ প্রকাশ করার আগে সামরিক শাসক গোষ্ঠীর অনুমতি নিতে হবে, তা জানিয়ে দেওয়া হয়। 

তাদের সেই প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী, সংবাদমাধ্যমকে চালাতে হয়। না হলে, সংবাদমাধ্যম বন্ধ করাসহ সম্পাদক, সাংবাদিকদের ওপর নেমে আসে চরম নির্যাতন, নিপীড়ন। নির্যাতনে কখনো কখনো তারা মারাও যান।

এর ব্যতিক্রম হয়নি, ২০০৭ সালের ১/১১-এর পরেও। 

এ সময়ও সামরিক শাসনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। এ সময় সব সংবাদমাধ্যমেরই মুখ বন্ধ হয়ে যায়। সে কারণে যে গোয়েন্দা সংস্থা প্রতিবেদনটি ডেইলি স্টারকে দিয়েছিল, তা না ছাপলে কী অবস্থা যে হতো তা একমাত্র ডেইলি স্টারের সম্পাদক এবং ওই হাউজের সাংবাদিকেরাই জানেন। 

মাহফুজ আনাম হয়ত ভদ্রতাবশত বলেছেন, তথ্যটি যাচাই না করে ছাপানো ভুল হয়েছে। আমি বলবো, ভুল হয়নি। ছাপতে তিনি বাধ্য হয়েছেন। না হলে অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে যেতো। 

সবার নিশ্চয়ই মনে আছে, ১/১১-এর পর ২৪ ঘণ্টা সংবাদভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল ‘সিএসবি’ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কারণ, সবারই জানা। 

আরো নিশ্চয় জানা আছে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাঘা বাঘা নেতারা তাদের দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে ‘মাইনাস’ করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন। কারণ কী! সেটাও সবার জানা। এখনকার মন্ত্রীরাও ছিলেন সে দলে। পরে তারা বলেছেন, সামরিক শাসকদের চাপে পড়ে সে কাজটি করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

কই তাদের বিরুদ্ধে তো মামলা হচ্ছে না। কেউ তো মামলা ঠুকে দিচ্ছেন না, ওই সব নেতা ও মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে।

আর যদি মামলা ঠুকতে হয়, তাহলে মিথ্যা তথ্য সরবরাহের অভিযাগ এনে ওই গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধেই তো আগে করা দরকার। কিন্তু কেউ করছেন না কেন! আমরা সবাই, জানি, সেই রকম বুকের পাটা কোনো নেতানেত্রী, মন্ত্রী-এমপি কিংবা ক্ষমতাসীন দলীয় নেতাকর্মীদেরও নেই। 

সেই সংস্থা তো দিব্যি আছে। সেই সংস্থা যদি ওই সময় এই রকম বানোয়াট তথ্য দিয়ে থাকে, তাহলে দেশ তো ভয়ঙ্কর অবস্থার মধ্যে আছে। বলা চলে, দেশটা তাহলে একটা বোমার ওপর বসে আছে। কিন্তু কই, কেউ তো সে বিষয়ে কথা বলছেন না। মূল হোতার বিরুদ্ধে মামলা না করে যিনি অকপটে স্বীকার করলেন, তার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা দায়ের করা একটা জাতির জন্য লজ্জাস্কর। 

আর ক্ষমতাসীন ওই দলটির জন্য অবমাননাকরও বটে!

অদ্ভুত দেশ এটা। যার বিরুদ্ধে সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছিল, চাইলে তিনি মানহানির মামলা করতে পারতেন। কারণ, এতে তার সম্মান নিয়ে টানাটানি করা হয়েছে। তিনি তা করেননি; অথচ যাদের মানহানি হয়নি, তারা মানহানির মামলা দিচ্ছেন, কী অদ্ভুত বিষয়টা!

এটা তো মস্করা করা ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। অথবা বলতে হয়, দেশটা কি তবে চাটুকারে ভরে গেল যে, যার মানহানি হয়নি, সে দিচ্ছে মানহানির মামলা!

মজার বিষয় হচ্ছে, এতে করে ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনামের সম্মান বিনষ্ট হচ্ছে না; হচ্ছে, ক্ষমতাসীন দলের। দলের ভাবমূর্তি প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছে। দেশবাসী বুঝতে পারছেন, কী থেকে কী হচ্ছে। 

বরং মাহফুজ আনাম যেভাবে বিনয়ের সঙ্গে স্পষ্টভাষায় ভুল স্বীকার করে দেশবাসীর কাছে আরো সম্মানিত হয়েছেন। কারণ, সবাই জানেন, সামরিক শাসনের সময় সংবাদমাধ্যমের অবস্থা কেমন থাকে। (যদিও একটি পক্ষ থেকে চাপের কথা তিনি বলেননি), 

কিন্তু যারা মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছেন, তাদের মধ্যে কোনো বাপের বেটা আছেন কি যিনি সাহসের সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করবেন! যিনি বা যারা মিথ্যা তথ্য সংবাদমাধ্যমে সরবরাহ করেছিলেন, তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন! আছেন কি কেউ? আছেন, কোনো বাপের বেটা!? 



সজীব ওয়াজেদ জয় শুক্রবার বলেছেন, মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের সংবাদমাধ্যমের ওপর আঘাত নয়।বেশ ভালো। তার কাছে আমার জানতে চাওয়া, তিনি কি সাহস রাখেন ওই গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে কিছু বলার বা মামলা করার। যদি তিনি সেটা পারেন, তবে তাকে আমি ব্যক্তিগতভাবে ধন্যবাদ জানাবো। বলবো- ‘বীর একজন’। কারণ, একটি গোয়েন্দা সংস্থা মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য সংবাদমাধ্যমকে দিয়েছিল প্রকাশের জন্য। তাহলে বিচারের আওতায় আনেন…! যদি বিচারের আওতায় আনতে পারেন, তাহলেই বুঝবো, ক্ষমতায় থেকে আপনারা ক্ষমতায় আছেন!


................................................................................................................................................................
http://www.bbc.com/bengali/news/2016/02/160214_bangladesh_editor_defamation_hasina
http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/774433/মাহফুজ-আনামের-বিরুদ্ধে-মামলা-গণমাধ্যমের-ওপর-আঘাত